নিজেস্ব প্রতিবেদক ।
পটুয়াখালীতে দিনকে দিন বেরেই চলেছে করোনা আক্রান্ত রুগীর সংখ্যা,উল্লেখ্য যে গত তিন দিনে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুনের ও বেশি হওয়ায় চিন্তিত গোটা জেলাবাসী । পটুয়াখালী জেলা স্বাধীন বাংলাদেশের ১৯ জেলার একটি অন্যতম জেলা । এ জেলায় পটুয়াখালীর পাশাপাশি বরগুনা জেলার মানুষ ও এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন ,জারফলে এজেলার চিকিৎসা ব্যবস্থার গুরুত্ব অনেক বেশি ।
দেশে চলমান মহামারী ভাইরাস করোনা শুরুর প্রাক্কালে এ জেলা সহ গোটা দক্ষিণ অঞ্চলের কোথাও পি সি আর ল্যাব না থাকলেও পরবর্তীতে বিভাগীয় শহর বরিশালে একটি ল্যাব স্থাপন করা হোলেও পটুয়াখালী থেকে বরিশাল গিয়ে পরীক্ষা করানো অসম্ভব প্রায় । যেকারনে পটুয়াখালীতে পি সি আর ল্যাব স্থাপন এখন সময়ের দাবী, ইতি মধ্যে এ নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও এর পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে জেলার সাধারণ মানুষ ।
যেখানে তিন দিন পূর্বে পটুয়াখালীতে ৮৩ জন করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছিলেন,তিনদিন পরে এখন এ সংখ্যা দ্বিগুনের কাছাকাছি ১৫৬ তে পৌছালো। যতই দিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে জেলায় করোনা পজেটিভ সনাক্তের সংখ্যা যা রীতিমত আতংকের সৃষ্টি করেছে পটুয়াখালী জেলা বাসীকে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্তকরন প্রকৃয়া বিলম্ব হওয়ার কারনে প্রতিদিনই নতুন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।পাশাপাশি প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা ।
এদিকে পটুয়াখালীর ১৮ লক্ষাধিক জনগনের স্বার্থে অবিলম্বে পটুয়াখালীতে একটি করোনা সনাক্তকরন ল্যাবের দাবীতে বর্তমান পরিস্থিতীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাবে জনমত গড়ে তুলে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষনে বিভিন্ন মুখী কার্যক্রম শুরু করেছে জেলাবাসী ।
পটুয়াখালী -১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মো: শাহজাহান মিয়া গত ৭ জুন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব বরাবরে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের অনুরোধ জানিয়ে ডিও লেটার প্রদান করেছেন।
এ ছাড়া জেলা প্রশাসকও পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সুপারের অনুরোধপত্রের অলোকে সেবা বিভাগের সচিব বরাবরে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবী জানিয়ে গত ৮ জুন অনুরোধ পত্র পাঠানো হয়, এদিকে জেলায় করোনা সনাক্ত করন রিপোর্ট প্রাপ্তীতে বিলম্বের কারনে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করেছেন জেলার সুশীলসমাজ,রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ সাধারন মানুষ।
একটি পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে জেলায় প্রাপ্ত রিপোর্র্টের অধিকাংশই আসতে ৫ থেকে ৭ দিন সময় লেগে যাচ্ছে।যার ফলে নমুনা প্রদানকারী অনেক ব্যাক্তির মধ্যে তেমন বড় ধরনের কোন উপসর্গ দেখা না দেয়ায় নমুনা প্রদানের পরে রিপোর্ট আসতে বিলম্ব করায় পরিবার সহ সমাজের বিভিন্ন জায়গায় স্বাভাবিক কাজকর্ম করে যাচ্ছেন তারা। পরবর্তীতে যখন ১ সপ্তাহ পরে রিপোর্ট আসে পজেটিভ,তখন তার সংস্পর্শে আসা লোকজন বিপাকে, তখন বাধ্য হয়ে অনেক ব্যাক্তির নমুনা সংগ্রহ করতে হয় ।
গত ১০ জুন রাতে পটুয়াখালী জেলায় যে ২৯ জন করোনা পজেটিভ সনাক্তের রিপোর্ট বরিশাল মেডিক্যাল কলেজের ল্যাব থেকে চিহ্নিত হয়ে পাঠানো হয়েছে,তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয় পটুয়াখালী থেকে ৩ জুন।এক সপ্তাহ পরে রিপোর্ট পটুয়াখালীতে আসে।যার মধ্যে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আউট ডোরে রুগী দেখেন একজন মহিলা উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার তিনি বিগত ১ সপ্তাহ যাবৎ হাসপাতালে ডিউটি করেছেন বলে নিশ্চীত করেছেন পটুয়াখালী হাসপাতালের আরএমও।
তিনি বলেন রিপোর্টের এ বিলম্বতার কারনে সেবা দাতা ও গ্রহীতা সহ সবাই হুমকীর মধ্যে পড়ে যাচ্ছি।
এদিকে পটুয়াখালীর বিভিন্ন সামাজিক ,রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পটুয়াখালীতে একটি পূর্নাঙ্গ আরটি-পিসিআর ল্যাবের দাবী জোড়েশেড়ে শুরু করেছেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে।
পটুয়াখালীতে করোনা টেস্টের ল্যাব চাই নামে একটি ফেইসবুক ভিক্তিক সংগঠনের উদ্যোক্তা এ্যাডভোকেট মুশফিকুর রহমান তুহিন বলেন,পটুয়াখালীতে অবিলম্বে একটি করোনা সনাক্তকরন ল্যাবের দাবীতে তারা ফেইসবুকের মাধ্যমে সংগঠিত হয়েছেন।গত তিনদিনে যেভাবে সংক্রমন বৃদ্ধি পেয়েছে সেটা রীতিমত উদ্বেগজনক।
ফেইসবুক ভিক্তিক সামাজিক অন্দোলনে অংশগ্রহনকারী সংগঠন হ্যাপী ক্লাবের এ্যাডমিন এ্যাডভোকেট তৌফিক হোসেন মুন্না বলেন, তিনি বলেন পুরাতন ১৯ টি জেলার ১টি পটুয়াখালী,যেখানে পটুয়াখালীতে একটি বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থাকা সত্বেও কেন ল্যাব স্থাপন করা যাচ্ছেনা ,এটা এখন সময়ের দাবী যেখানেই হোক পটুয়াখালীকে ঝুকিমুক্ত করতে অতি দ্রুত একটি ল্যাব স্থাপনের দাবীতে সকলের সাথে কাজ করতে তারা একমত।
এছাড়া পৌর এলাকার যেসব এলাকায় করোনা পজেটিভ সনাক্ত হচ্ছে, কেন্দ্রের মত হটস্পট চিহ্নিত করে সেসব এলাকায় প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়ার দ্রুত দাবী জানান জেলা প্রশাসনের কাছে।
পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পটুয়াখালীতে করোনা সনাক্তকরনের জন্য ল্যাব প্রতিষ্টা জরুরী প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সুপার ডা: এম এ মতিন বলেন ইতোমধ্যে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে একটি করোনা সনাক্ত করন পিসি আর ল্যাব স্থাপনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের বিষয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসককে তিনি একটি চিঠি দিয়েছেন।